নিজস্ব প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বোড়াশী ইউনিয়নের বর্তমান ৬নং ওয়ার্ডের পরপর ৩ বারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি মিটু মোল্লার উপর সন্ত্রাসী হামলা, ভেন্নাবাড়ি এলাকায় হামলা, লুটপাট, ছিনতাই সহ প্রাননাশের হুমকী ও গোপালগঞ্জ আদালতে তিনজন আইনজীবীর নিকট মামলার ভয় দেখিয়ে ছয় লক্ষ টাকা চাঁদা দাবীতে চাঁদাবাজীর মামলায় ২১নং বোড়াশী ইউনিয়নের ভেন্নাবাড়ি এলাকার মো. আলিম মোল্লাকে গত শুক্রবার ৪ এপ্রিল সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টা ৩০ মিনিটে গোপালগঞ্জের সদর উপজেলা থেকে যৌথ বাহিনীর এক অভিযানে আটক করে গোপালগঞ্জ সদর থানায় সোপর্দ করে।
বোড়াশী ইউনিয়নের বর্তমান ৬নং ওয়ার্ডের পরপর ৩ বারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য জনপ্রিয় জন প্রতিনিধি মিটু মোল্লার উপর সন্ত্রাসী হামলা ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। অভিযোগে আরো পাওয়া যায়, একই গ্রামের একাধিক মামলার আসামি বার বার দলবদলকারী নেতা আলিম মোল্লার নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনী এই হামলা করেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩১শে মার্চ রাত আনুমানিক ১২টা ১৫ মিনিটে মিটু মোল্লা ও তার সঙ্গীয়রা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস,এম জিলানীর সাথে দেখা করে পাটগাতি থেকে বাড়ি ফেরার পথে এ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন তিনি ।
হামলার ঘটনা ঘটে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্নি ইউনিয়নের উত্তর বাসুড়িয়া আইয়ুব আলীর বাড়ির রাস্তার পাশে। সন্ত্রাসীরা মিটু মোল্লাকে দেশীয় অস্ত্র চাইনিজ কুড়াল, রামদা হাতদা, ও হাতুড়ি দিয়ে কুপিয়ে মর্মান্তিক ভাবে জখম করে। পরে হামলাকারীরা মিটু মোল্লাকে মৃত ভেবে পাশের এক পুকুরের ভিতরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় মিটু মোল্লাকে গোপালগঞ্জ ২৫০শয্যা বিশিষ্ঠ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওখানকার কর্তব্যরত ডা. মিটু মোল্লার অবস্থর অবণতি দেখে ঢাকা প্রেরণ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
এ ব্যাপারে টুঙ্গিপাড়া থানায় মিটু মোল্লার ছেলের শ্বশুর আমানত মুন্সী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় নওশের মোল্লা ও আলিম মোল্লাকে প্রধাণ আসামীসহ আরো ১৮ জনকে নামধারী ও অজ্ঞাতনামা ৮/১০ আসামি করে মামলা রুজ হয়। যার নাম্বার ৩২/২০২৫ইং।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, নওশের মোল্লা ও আলিম মোল্লা দীর্ঘ দিন ধরে একের পর এক অপকর্ম সংঘটিত করছে। আলিম মোল্লার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী হিসাবে একাধিক মামলা রয়েছে। আলিম মোল্লা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় অপকর্ম করে পার পেয়ে যায়। তিনি একসময় জাকের পার্টির গোপালগঞ্জ-২ আসনের এমপি হিসাবে কখোনো আওয়ামী সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস-২ এর হাত ধরে আবার বর্তমানে গোপালগঞ্জ বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।
এর আগে গত ১৭ই মার্চ বিকালে আলীম মোল্লা তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ক্ষমতার দাপটে ভেন্না বাড়ি এলাকার সাইদ মোল্লার দোকানের সামনে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করলে সাইদ মোল্লা নিষেধ করলে তার উপর হামলা চালায় আলিম মোল্লা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। হামলাকারীরা লুট করে নিয়ে যায় দোকানের মালামালসহ প্রতিবাদকারীদের গলার চেইনও তারা কেড়ে নিয়ে যায়। এসব তথ্য পাওয়া যায় গোপালগঞ্জ সদর থানায় ইসমাইল মোল্লা বাদী হয়ে করা মামলার লিখিত এজাহারে। যার মামলা নম্বর-২৮/২০২৫ ।
গত ১৯ শে মার্চ গোপালগঞ্জ আদালতের আইনজীবী মো. সাইদ হোসেন, নাফিজুর রহমান, রুহুল আমিনকে ভেন্নাবাড়ি মুন্সীবাড়ি স্কুলের পাশের রাস্তার উপর জনসম্মুক্ষ্যে দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে মারধর ও ভয় ভীতি প্রদর্শন করে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে, এ সময় মেরে ফেলার হুমকী দিয়ে মো. সাইদ হোসেন (এ্যা:) এর নিকট থেকে ৫৫ হাজার টাকা, নাফিজুর রহমান (এ্যা:) কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন এই আলিম মোল্লা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী।
ভুক্তভোগীরা জানান, সন্ত্রাসীরা তাদের ঘাড়ের উপর রামদা ধরে রেখে ফাঁকা স্টাম্পে সাক্ষর করিয়ে নেয় পরবর্তীতে আরো টাকা আদায় করার জন্য। এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জ সদর থানায় আলিম মোল্লা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজীর মামলা রুজ হয়েছে, যার মামলা নং- ১৪০/২৫ গোপা:।
এ ব্যাপারে আভিযুক্ত আলিম মোল্লার কাছে মুঠফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ওরা যে সকল মামলা করেছে তা সম্পূর্ন সাজানো ও মিথ্যা। এলাকার দলাদলির রেসে আমাকে মামলায় ফাঁসিয়েছে। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ।